Phone:
+88 01927 525364, +88 01712 086102
নদীর নাম মধুমতী – Nodir Naam Modhumoti (The River Named Modhumoti)
Synopsis of the film Nodir Naam Modhumoti
- চলচ্চিত্র: নদীর নাম মধুমতী – Nodir Naam Modhumoti (in English: The River Named Modhumoti)
- ভাষা: বাংলা
- দেশ: বাংলাদেশ
- সাব-টাইটেল: ইংরেজি
- চিত্রনাট্য, কাহিনী ও পরিচালনা: তানভীর মোকাম্মেল (Tanvir Mokammel)
- ফরম্যাট: ১৬ মি. মি. / রঙিন
- দৈর্ঘ্য: ১২০ মিনিট
- চিত্রগ্রহণ: আনোয়ার হোসেন
- সম্পাদনা: মহাদেব শী
- শিল্প নির্দেশনা: মানজারে শামিম
- আবহসঙ্গীত: সৈয়দ সাবাব আলী আরজু
- শব্দ গ্রাহক: সৈয়দ রফিকুল আলম
- আবহসঙ্গীত গ্রহণ: ঝংকার সাউন্ড স্টুডিও
- গ্রাফিক্স: নারায়ণ শী
- প্রযোজনা: কিনো-আই ফিল্মস (Kino-Eye Films)
- নির্মাণকাল: ১৯৯৬
- মুক্তি: ১৯৯৬
- অভিনেতা ও অভিনেত্রী: আলী যাকের, মমতাজউদ্দিন আহমেদ, তৌকির আহমেদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, আবুল খায়ের, সারা যাকের, আফসানা মিমি, রামেন্দু মজুমদার, কেরামত মওলা, আয়েশা আক্তার, ঝুনা চৌধুরী, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ভাস্বর বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ।


কাহিনী সংক্ষেপ
১৯৭১ সাল। মধুমতী নদীর পারে রসুলপুর এক নিভৃত গ্রাম। চারপাশে নদী ও চর ঘেরা এ গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোতালেব মেম্বর। মোতালেব মেম্বরের জৈষ্ঠ ভ্রাতা আবু তালেব নৌকাডুবিতে মারা যায়। মধ্যবয়সী মোতালেব মেম্বর নিজের বিধবা ভ্রাতৃবধুকে বিবাহ করে যে ভাইয়ের ঔরসে দু’টি ছেলেমেয়ে আছে। ছেলেটির নাম বাচ্চু। বাড়ীতে আরও আছে মোতালেব মেম্বরের বৃদ্ধ এক ধার্মিক চাচা, যিনি পরিবারটির মুরুব্বীস্থানীয়। আর রয়েছে রসুলপুর গাঁয়েরই বাসিন্দা দরিদ্র ফজু, বই পাগল আদর্শবাদী এক বৃদ্ধ শিক্ষক অমূল্য চক্রবর্তী ও তার বিধবা মেয়ে শান্তি। রয়েছে বাচ্চুর বন্ধু রাজনীতিসচেতন যুবক আখতার। যাত্রা দেখে, কবুতর উড়িয়ে কেটে যাচ্ছিল সদ্যযুবা বাচ্চুর জীবন। এমন সময় এল ১৯৭১ সাল। গ্রামে একদিন মিলিটারী এল। ক্যাম্প করল। গ্রামের মানুষেরা পক্ষে ও বিপক্ষে বিভাজিত হোল। ইউনিয়ন পরিষদের (যা এখন শান্তি কমিটি) চেয়ারম্যান খালেক চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গড়ে উঠল রাজাকারবাহিনী। ফজু এক উৎসাহী রাজাকারে পরিণত হোল, লুটপাটই যার কাজ। কিছুটা ঘটনাক্রমে, কিছুটা ক্ষমতার আকর্ষণে মোতালেব মেম্বরও শান্তি কমিটির সদস্য হোল। গ্রামের যুবকেরা অনেকেই গ্রাম ছেড়ে চলে গেল মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে। এক সন্ধ্যায় বাড়ীর সিন্দুক ভেঙ্গে বন্দুক চুরি করে আখতারের সঙ্গে বাচ্চুও ডিঙ্গি নিয়ে বেরিয়ে পড়ল।
শুরু হোল্ সহজ সরল গ্রামীণ যুবক বাচ্চুর জীবনের কঠিন পাঠ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক লঞ্চ থামিয়ে এক গণহত্যা ওরা প্রত্যক্ষ করল। উল্টোডাঙ্গা বেস্ ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প পাহারা দেবার সময় নদীর পারে বাচ্চুর সঙ্গে চোখাচোখি হোত জল নিতে আসা এক গ্রাম্য কিশোরী রাহেলার। চোখাচোখিই, কারণ এরপরে বাচ্চুদের ইউনিটকে পাঠানো হোল গেরিলা প্রশিক্ষণের জন্যে।
রসুলপুর গাঁয়ে ততদিনে ঘটে চলেছে নানা নৃশংস ঘটনা। রাজাকাররা অমূল্য মাস্টারকে অপহরণ করে মেরে ফেলেছে। বিধবা যুবতী শান্তির প্রতি লোভ জন্মায় মোতালেব মেম্বরের। মোতালেব মেম্বরের এই নৈতিক স্খলনের প্রতিবাদে বাচ্চুর মা ভিন গাঁয়ে মেয়ে-জামাইয়ের বাড়ীতে চলে যান। স্ত্রীর আপত্তি, মুরুব্বীস্থানীয় বৃদ্ধ চাচার বাঁধা এসবকে ছাপিয়ে যুদ্ধের এই দিনগুলিতে মোতালেব মেম্বর ক্রমশ: হারাতে থাকে তার মনুষ্যত্ব। একসময় সে অসহায় শান্তিকে বিয়ে করে ঘরে তুলে আনে।
বর্ষার মৌসুমে বাচ্চুদের ইউনিট ফেরে উল্টোডাঙ্গায়। বাচ্চু দেখে পাকিস্তানী সৈন্যরা গোটা গ্রামটি পুড়িয়ে দিয়েছে। উন্মাদিনী অবস্থায় আবিষ্কার করে রাহেলাকে। পাগলিনী রাহেলা এখন যাকে পায় তাকেই কবর দিতে চায়। কারণ গণহত্যার শিকার ওর বাবা-মার কবর হয়নি। নানা ছোটখাট যুদ্ধের পর বাচ্চুদের বাহিনী একসময় ফেরে মধুমতী নদীর পারে রসুলপুর অঞ্চলে। তাদের গেরিলা দলটিতে রয়েছে রুক্ষ প্রকৃতির গেরিলা মজনু, স্নেহময় শিক্ষক শহীদ মাস্টার যে তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের নানা পৌরাণিক গল্প শোনায়, গানপাগল ননী, ক্ষিপ্র যোদ্ধা আখতার। মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন করে একসময় রসুলপুরের অত্যাচারী খালেক চেয়ারম্যানকে মেরে ফেলে। নতুন চেয়ারম্যান হয় মোতালেব মেম্বর। চেয়ারম্যান হওয়ার পর মোতালেব মেম্বরের অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। তার রাজাকার বাহিনীর হাতে একে একে নিহত হয় আখতার, ননী, একের পর এক মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু সহযোদ্ধা বাচ্চুর পিতা বলে মুক্তিযোদ্ধারা মোতালেব মেম্বরের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক। এদিকে মোতালেব মেম্বর ও তার রাজাকার বাহিনীকে উৎখাত করতে না পারলে বগলার খাল, যা খুবই ষ্ট্রাটেজিক পয়েন্ট সামগ্রিক যুদ্ধের জন্যে, মুক্ত হয় না। অবশেষে বাচ্চু সিন্ধান্ত নেয় মোতালেব মেম্বরকে নিশ্চিহ্ন করার। এক সন্ধ্যায় একটি ডিঙ্গি ও রাইফেল নিয়ে সে একাই বেরিয়ে পড়ে।
অর্জন
“চিত্রা নদীর পারে” চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ কাহিনী, শ্রেষ্ঠ সংলাপ এবং শ্রেষ্ঠ পুরুষ গায়ক – মোট তিনটি ক্ষেত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।