লালসালু – Lalsalu (A Tree Without Roots)

Synopsis of the film Lalsalu

  • চলচ্চিত্র: লালসালু – Lalsalu (in English: A Tree Without Roots)
  • ভাষা: বাংলা
  • দেশ: বাংলাদেশ
  • সাব-টাইটেল: ইংরেজি
  • চিত্রনাট্য কাহিনী ও পরিচালনা: তানভীর মোকাম্মেল (Tanvir Mokammel)
  • কাহিনী: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
  • দৈর্ঘ্য: ১১০ মিনিট
  • ফরম্যাট: ৩৫ মিলিমিটার (রঙ্গীন)
  • চিত্রগ্রহণ: আনোয়ার হোসেন
  • প্রধান চিত্রগ্রহণ সহকারী: এ. আর. স্বপন
  • চিত্রগ্রহণ সহকারী: মো. শাহ আলম খোকা,  মো. আলমগীর হোসেন, সৈয়দ মোহাম্মদ ওয়াসিম
  • সম্পাদনা সহকারী: মন্টি দাস
  • স্থিরচিত্র: খাদেমুল ইনসান
  • লাইট সরবরাহ: টেকনিশিয়ান স্টুডিও
  • চিত্রনাট্য উপদেষ্টা: শাহজাহান চৌধুরী
  • সহপ্রযোজক: মাছরাঙ্গা প্রডাকশন লি.
  • প্রধান সহকারী পরিচালক: জাইবুল আনাম খান 
  • সহকারী পরিচালক: সৈয়দ সাবাব আলী আরজু, সরোয়ার চৌধুরী, সগীর মোস্তফা
  • ব্যবস্থাপক: তসলিম আহমেদ
  • ব্যবস্থাপনা সহকারী: মাসুদ রানা, কল্যাণ কুমার পাত্র, আনোয়ার তমিজউদ্দীন, মনোয়ার তমিজউদ্দীন, নিবাস চিসিম, চাঁদ মিয়া
  • সম্পাদনা: মহাদেব শী
  • শিল্প-নির্দেশনা: উত্তম গুহ
  • শিল্প-নির্দেশনা সহকারী: সেলিম নাশিন
  • আবহসঙ্গীত: সৈয়দ সাবাব আলী আরজু
  • পোষাক: ইকবাল আহমেদ, মৌসুমী
  • রূপসজ্জা: দীপক শূর
  • প্রযোজনা তত্ত্বাবধায়ক: সারোয়ার তমিজউদ্দিন
  • শব্দ গ্রাহক: রতন পাল
  • শব্দগ্রহণ সহকারী: মু. আবদুস সাত্তার রিপন, কামরুল হাসান, জি. শিবকুমার, পি. পারি
  • অভিনেতা ও অভিনেত্রী: রাইসুল ইসলাম আসাদ, মুনিরা ইউসুফ মেমী, চাঁদনী, রওশন জামিল, আমিরুল হক চৌধুরী, চিত্রলেখা গুহ, আলী যাকের, তৌকির আহমেদ, মৌসুমী, তামান্না ইয়াসমিন তিথি, মাসুদ আলী খান, সাইদুর রহমান বয়াতী প্রমুখ
  • নির্মাণকাল: ২০০১
  • মুক্তি: ২০০১
  • প্রযোজনা: কিনো-আই ফিল্মস (Kino-Eye Films)
লালসালু (২০০১) চলচ্চিত্রের মজিদ নামক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ।
লালসালু (২০০১) চলচ্চিত্রের মজিদ নামক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ।
লালসালু (২০০১) চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র - মজিদের ছোটবউ - জমিলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন চাঁদনী।
লালসালু (২০০১) চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র – মজিদের ছোটবউ – জমিলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন চাঁদনী।
লালসালু চলচ্চিত্রটি নির্মাণকালে পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল - ২০০১।
লালসালু চলচ্চিত্রটি নির্মাণকালে পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল – ২০০১।

কাহিনী সংক্ষেপ

ধান ও ফসলে ভরা কৃষিভিত্তিক এক গ্রামে হঠাৎ একদিন শীর্ণকায় এক মোল্লা এসে উপস্থিত হয়। মজিদ নামের তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এই মানুষটি বাঁশঝাড়ের মাঝে পরিত্যক্ত এক গ্রামীণ কবরকে ঝাড়ামোছা করে প্রচার করা শুরু করে যে এটা জনৈক মোদাচ্ছের পীরের মাজার। সহজ গ্রামবাসীরা সরল বিশ্বাসে এটা মেনে নেয় এবং মাজারটিতে চাল, টাকা ইত্যাদি নানারকম মানত দেয়া শুরু করে। মাজারের খাদেম হিসেবে মজিদই সেসব জিনিষ গ্রহণ করে। মাজারের ক্রমপ্রসারের সাথে মজিদের সম্পদ ও সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়তে থাকে। একসময় মজিদ রহিমা নামে দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে চওড়া কিন্তু নরম মনের এক নারীকে বিয়ে করে। বুদ্ধিমান মজিদ মানুষের মনোজগতের দূর্বল দিকগুলি সঠিকভাবে বুঝতে পারে। আর সে কারণেই গ্রামবাসীদের উপর, এমনকি গ্রামপ্রধান জোতদার খালেক ব্যাপারীর উপরও সে তার মানসিক কর্তৃত্ব সৃষ্টি করে। মজিদের পথে কেউ সামান্যতম অন্তরায় সৃষ্টি করলে মজিদ নির্মমভাবে তাকে ধ্বংস করে। যেমন তহুর বাপ নামে এক গ্রামীণ বৃদ্ধ, কিংবা আক্কাস নামে এক যুবক যে গ্রামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল কিংবা খালেক ব্যাপারীর সন্তানহীনা প্রথম স্ত্রী আমেনা বেগম যে মজিদের পরিবর্তে আওয়ালপুরের পীরের কাছে থেকে পানিপড়া আনতে চেয়েছিল। মজিদের ক্রুরতা এদের সবার জীবনকেই বিপর্যস্ত করে। তহুর বাপ নিরুদ্দেশ হয়, আক্কাস স্কুলের পরিকল্পনা বাদ দিতে বাধ্য হয় এবং খালেক ব্যাপারীকে দিয়ে মজিদ আমেনা বেগমকে তালাক দেওয়ায়।

নিজের শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মজিদ একসময় অনুভব করে সে জীবনকে উপভোগ করেনি। তার শৈশব-যৌবনের কঠোর দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন তাকে অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত করেছে। প্রথমা স্ত্রী রহিমার প্রতিও সে আর তেমন আকর্ষণ বোধ করে না। একসময় মজিদ জমিলা নামের অল্পবয়স্কা একটি মেয়েকে বিয়ে করে। জমিলা প্রাণোচ্ছল এক কিশোরী। সারা গ্রামের মানুষ মজিদকে ভয় পেলেও জমিলা মজিদকে ভয় করে না। আর সবচে’ বড় কথা মাজারটিকেও সে তেমন ভয় পায় না। দোর্দন্ত ক্ষমতার অধিকারী মজিদ তার কিশোরী বউটির কাছে কেমন যেন অসহায় বোধ করে। তার কোনো জারিজুরীই এখানে তেমন খাটে না। মজিদ জমিলাকে শাস্তি দিতে মনস্থ করে। নামাজ পড়ার সময় জায়নামাজে ঘুমিয়ে পড়ার অপরাধে এক ঝড়-বৃষ্টির রাতে মজিদ জমিলাকে মাজারে নিয়ে বেঁধে রাখে। জমিলার প্রতি সহানুভূতিশীল রহিমা উৎকণ্ঠিত হয়। কিন্তু মজিদ জমিলাকে শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর। তার নির্মম জগতে স্নেহ-মায়া-মমতার কোনো স্থান নেই। কিন্তু মজিদের বিমানবিকতার বিরুদ্ধে মা প্রকৃতিই যেন একসময়ে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠে। এক প্রচন্ড ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মজিদের ভূঁয়ো মাজার প্লাবিত হয়ে যায়। জীবনের শক্তির কাছে মৃত মাজার পরাজিত হয়।

লালসালু চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট

ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর কালজয়ী এক উপন্যাস “লালসালু”। ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাসটিতে তৎকালীণ পূর্ববঙ্গের গ্রামীণ মুসলিম জনজীবনের গভীর ও অন্তর্ভেদী এক চিত্র ফুটে উঠেছে যা সমসাময়িক আবার চিরন্তনও বটে।

লালসালু চলচ্চিত্রের অর্জন

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রহণ ও শ্রেষ্ঠ পরিচালনাসহ আটটি ক্ষেত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত। লন্ডন, রটারডাম, মন্ট্রিল, কুইবেক, সিনেনোভা (বেলজিয়াম), দুবাই, জিওনজু (দক্ষিণ কোরিয়া), ফুকোওকা (জাপান) এবং দিল্লী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত।

জুরীর পুরস্কারপ্রাপ্ত, প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, ঢাকা, ২০০৩।