Phone:
+88 01303 616741, +88 01783 502242
Physical address:
House-39/A, Flat-B3, Road-4/A
Dhanmondi, Dhaka-1209, Bangladesh
১৯৭১ সাল। বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থানার অন্তর্গত পরাণপুর গ্রামের গরীব ঢাকি জীবনকৃষ্ণ দাস “জীবনঢুলী” নামেই বেশী পরিচিত ছিল। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আগে গরীব ঢাকি জীবনঢুলীর জীবন কাটছিল সুখে-দুঃখে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাণপুর গ্রাম আক্রমণ করলে শরণার্থী হিসেবে ভারতে পলায়নের সময় জীবনঢুলীর স্ত্রী ও সন্তানেরা চুকনগর গণহত্যায় নিহত হয়। জীবনঢুলী সীমান্ত পার না হয়ে গ্রামে ফিরে আসে। পরাণপুর গ্রামে তখন মালেক শিকদারের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর দোর্দণ্ডপ্রতাপ। রাজাকাররা জীবনঢুলীকে বাঁচিয়ে রাখে এই শর্তে যে ওকে রাজাকার বাহিনীর বাজনদার হিসেবে ঢোল বাজাতে হবে। নানা অপমান ও লাঞ্চনা সয়ে রাজাকারদের ঢোলবাদক হয়ে কাটতে থাকে জীবনঢুলীর দিন।
যুদ্ধের আগে পাশের গ্রামের স্বচ্ছল দত্তদের বাড়ীতে দূর্গাপুজার ঢাক বাজাতে যেত জীবনঢুলী। ওখানে সে দত্তদের বাড়ীর সুন্দরী তরুণী বউটিকে দেখেছিল যার শুচিতা ও সৌন্দর্য্য জীবনঢুলীকে মুগ্ধ করেছিল। যুদ্ধের সময় রাজাকারদের হাতে বন্দী হয় দত্তবাড়ীর সেই বউটি। জানালার শিকের ফাঁকে মাঝে মাঝে সেই বন্দী নারীর মুখ দেখতে পায় জীবনঢুলী।
যুদ্ধের শেষের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা পরাণপুর গ্রামে সফল আক্রমণ চালায়। রাজাকাররা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে যে বাড়ীটাতে “দত্তবাড়ীর বউ” টি আটকে ছিল সেই বাড়ীটাতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে যায়। জানালার শিকের মাঝে একবার কেবল দেখা যায় বউটির ভয়ার্ত মুখ। জীবনঢুলী আগুনে-পুড়তে-থাকা বাড়ীটার চারপাশে পাগলের মত ঘুরে ঘুরে ঢোল বাজাতে থাকে! প্রথমে ধীরে, পরে দ্রুত লয়ে।